# সময় অতিবাহন
দুপুর থেকে টানা বৃষ্টিতে আবহাওয়াটা বেশ গুমোট হয়ে আছে। জানালার পাশে বসে বসে পাশের বাসার পিচ্চি ছেলেটার কান্ড দেখছিলাম। বারান্দায় দাঁড়িয়ে বৃষ্টির পানিতে একবার তার ছোট্ট হাতটা বাড়িয়ে ধরছিল, আবার খুব দ্রুততার সাথে হাতটা বারান্দার ভেতর নিয়ে নিচ্ছিল। অনেকক্ষণ ধরে তার দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে আমি একসময় অন্যমনস্ক হয়ে পড়েছিলাম। কি ভাবছিলাম জানি না……হঠাৎ সম্ভিত ফিরে পেয়ে ছেলেটাকে আর বারান্দায় দেখতে পেলাম না। হয়তো ছেলেটার মা তাকে বাসার ভেতর নিয়ে গেছে। এখন সময় কাটানোর জন্য অন্য কিছু একটা নিয়ে ভাবতে হবে......
# আমিত্ব
ঘুমিয়ে আছি অনেকক্ষণ। হঠাৎ ঘুম ভেংগে দেখি আমি ঘুমিয়ে আছি আমারই পাশে! পাশের আমিটা বেশ জড়োসড়ো হয়ে আছে, ঠান্ডা লাগছে হয়তো! কম্বলটা টেনে দিয়ে আবার শুয়ে পড়লাম। নিজেকে তো আর কষ্ট দেয়া যায় না!
# নদী
তোমার একটা নদী আছে। একান্তই তোমার! তুমি রোজ সন্ধ্যায় তার তীরে গিয়ে চোখ বন্ধ করে দাঁড়িয়ে থাকো। তোমার খোলা চুলে বাতাসেরা খেলা করে যায়। তোমার সেদিকে মন থাকে না। তুমি নদীর জলের শব্দে আমার পদধ্বনি খুঁজে ফেরো রোজকার মত!
আমি যে বাতাস হয়েই রোজ আসি সেটা তুমি বুঝতে পারো না, তোমার কর্ণকুহরে আমার কথাগুলো পৌঁছে না, তুমি জলের শব্দ শুনতে ব্যস্ত!
# ফ্লেমিংগো
ফ্লেমিংগো এখন নিয়ম করে সকাল সকাল ছাদে যায়। সকালের এ সময়টার জন্যও তার ইচ্ছে করে হাজার বছর বেঁচে থাকতে। পৃথিবীটা এত সুন্দর! ভোরের নীরবতা উপভোগ করার জন্য মাঝে মাঝে তার ইচ্ছে করে কোনো এক গাছের ডালে বসলে মন্দ হতো না। কিন্তু ফ্লেমিংগো যে গাছে উঠতে পারে না!
# হ্যাশট্যাগ
হ্যাশট্যাগ একটা চমৎকার জিনিস। মনে হয় দুইটা রেলপথ দুইদিকে চলে যাচ্ছে। আমি দুই রেলপথের কাছে দাঁড়িয়ে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছি। ট্রেনে আমার প্রিয় লেখক হুমায়ুন আহমেদ আসবেন, সাথে আসবেন শরৎচন্দ্র। আচ্ছা তারা কি একই ট্রেনে থাকবেন? একই ট্রেনে থাকলে সমস্যা নাই। কিন্তু তারা যদি ভিন্ন ট্রেনে থাকেন তবে আমি কার সাথে যাবো!
# বন্ধ চোখ
সকালটা শুরু হয় আমার বন্ধ চোখে, আমি বন্ধ চোখেই মোবাইলের দিকে তাকিয়ে সময়টা দেখি, ঠিক ৬ টা বেজে ১৫ মিনিট! চোখ না খুলেই আমি বিছানা থেকে নেমে আস্তে আস্তে ভাবতে থাকি আজ কি করবো আমি? সারাটা দিন! আজ কি বার? মনে করতে পারছি না! স্মৃতিরা মস্তিষ্কের সবক'টা সেল কি দখল করে নিলো! ছাদে গিয়ে একটু হেটে আসতে খুব ইচ্ছে করছে, ইচ্ছেদের আর গলা টিপে মারতে ইচ্ছে হয় না! বন্ধ চোখেই সিড়ি বেয়ে আমি চলে এলাম ছাদে, ছাদ থেকে পুরো শহরটা সবসময় দেখা হতো আগে, কখনো ছাদ থেকে নিচটা দেখা হয়নি আমার! আজ ছাদ থেকে নিচের দিকে তাকিয়ে আমি ভাবছি আমি কি চাইলেই শূন্যে হাঁটতে পারবো? এমন ভাবার অবশ্য একটা কারণ আছে, একটা বছর হলো আমি বন্ধ চোখেই সবকিছু দেখতে পাই। এতোদিন খোলা চোখেও দেখতে পেতাম, ইদানিং খোলা চোখে অন্ধকার দেখি। সে অন্ধকারের মাঝে দুটি চোখ আমার দিকেই তাকিয়ে থাকে! অসহ্য!!! একদিন খোলা চোখে শূন্যে ভাসার চেষ্টা করে দেখবো, মস্তিষ্কের সেলগুলো দমকা বাতাসে হয়তো সেদিন তার স্মৃতিগুলো ভাসিয়ে দিবে, শূন্যে!!!
# এটা কি চা ! না কি অমৃত !
সভ্যতার বিবর্তনে লোক দেখানো ভালো থাকাটা আমরা বেশ ভালোভাবে রপ্ত করতে পেরেছি। সকাল-সন্ধ্যা হতাশাদের সূর্যোদয় আর সূর্যাস্ত ভেবে নিজেরাই নিজেদের গল্প শুনাই কাল হয়তো সব ঠিক হয়ে যাবে! মাঝে মাঝে আমরা আমাদের বেশ কিছু বড় সমস্যা অনেক সাবলীলভাবে মোকাবেলা করতে পারলেও ছোট ছোট সমস্যারা আমাদের পরাস্ত করে, অন্তত আমাকে করে। আমার আমি অনেকটা তেতো চা গিলেও হাসিমুখে বলি, আরেকটু চা কি হবে? খেতে অমৃত হয়েছে! আবার আমার আমি ভালো লাগা সকালটার দিকে বহুদিন ফিরেই তাকাই না!
# তোমার গলায় হাতটি কার ?
মাঝে মাঝে জীবন তোমার গলা চেপে ধরে বলবে, মরে যাও! কি আশ্চর্য না? তার চেয়ে বেশী আশ্চর্য হলো মৃত্যু যখন তোমার গলায় হাত বুলিয়ে বলবে, বেঁচে থাকো, প্লিজ! দেখার বিষয় তোমার গলায় কার হাত? তুমি তার কথাটা কি রাখতে চাও? না কি তুমি তোমার তুমিত্বে বলীয়ান হয়ে তোমার মনোবাসনা পূরণ করবে! আমি হলে কি করতাম? মরে গিয়ে বেঁচে যেতাম? না কি বেঁচে থেকে বার বার মরতাম?
# স্বপ্ন ডানা
প্রতিটা রাতে ঘুমের মাঝে স্বপ্নে হেটে ছাঁদ পর্যন্ত যাই। ছাঁদ থেকে একটা লাফ দেই। ভাবি হয়তো আমার কাঁধজুড়ে দুটো ডানা গজাবে আর আমি উড়ে বেড়াবো। হয়না! ডানাদের গজানো হয়না! মুখ থুবড়ে পড়ি রাস্তায়, ঘাড় ভেঙ্গে গল গল করে রক্ত বয়ে যায়। সেই রক্তদানা আমায় নিয়ে যায় মাটির নিচে, অনেক নিচে। সাড়ে তিন হাতের চেয়েও বেশী নিচে কি? মেপে দেখা হয়না কখনো। হবেও না কখনো!
# সার্থকতা !
ঠিক কবে, কোথায়, কিভাবে মৃত্যুবরণ করলে তোমার মনে হবে আমার মৃত্যুটা সার্থক হবে? জন্ম সার্থক করার জন্য আবার জন্মগ্রহণ করা তো সম্ভব না, তাই আমার মৃত্যুটাই না হয় সার্থক হোক!
# সেপ্টেম্বর
মাস হিসেবে সেপ্টেম্বর বছরের নবম মাস। ইংরেজি September এ অ্যালফাবেটও নয়টা! নয় একটি বিজোড় সংখ্যা, স্রষ্টা বিজোড় সংখ্যা পছন্দ করেন। স্রষ্টা একজন, তিনিও বিজোড়। S-e-pt-e-mb-e-r = ১-e-২-e-২-e-১ !!! এমন অনেক হেয়ালীপনায় ভরপুর এ বিজোড় জগৎ।
# দুরের চাঁদ, কাছের চাঁদ
খুব কাছ থেকে যদি তুমি চাঁদকে উদিত হতে দেখো তাহলে মনে হবে একটা বিশাল চাঁদ খুব দ্রুত তোমার দিকে ছুটে আসছে, কিন্তু তোমাকে সে কিছুতেই ধরতে পারে না। তুমিও কিন্তু তাকে ছুঁতে পারো না! খুব কাছ থেকে চাঁদ ছোঁয়া না গেলেও দূর থেকে তুমি কিন্তু একটু চাঁদের আলো চুরি করে নিতে পারো! সেটা কিভাবে করবে? সেটা আরেকদিন বলবো।
# দিন-ক্ষণ
একটা সময় আমি দিন-ক্ষণ মনে রাখতে পারতাম না, কেউ যদি জানতে চাইতো আজ কি বার? আমি সব সময় সঠিকভাবে বলতে পারতাম না, খুব অপ্রস্তুত হয়ে যেতাম। আমার আসলে জানার প্রয়োজন হতো না। প্রয়োজনের বাইরে কিছুই করতে ইচ্ছে করতো না তখন। এখন আমার দিন-ক্ষণ বেশ মনে থাকে, এখন অনেক অপ্রয়োজনীয় কাজও করা হয়!
# স্টোন
ইসকান্দার সাহেব সকাল থেকে খুব ফুরফুরে মেজাজে আছেন। গতকাল ভাগ্য ফেরানোর জন্য বেশ কিছু স্টোন কিনেছেন, আংটি বানিয়ে হাতেও পড়েছেন! ভাগ্য তাহলে এবার ফিরবেই! অন্যদিকে স্রষ্টা তার কান্ড দেখে হাসছেন, স্টোনগুলো সত্যি সত্যিই তার ভাগ্য ফিরিয়েছে, তার ভাগ্যের সব ভালোগুলো তার হাতের স্টোন দেখে ফিরে এসেছে! স্টোন আসলেই ভাগ্য ফেরায় !!!
# পঙ্গুত্ব
একটা সময় বর্ষা আমার খুব প্রিয় ছিল, এখন আর ভাল লাগে না। আসলে অনেক কিছুই আগে ভালো লাগত, এখন আর লাগে না। গত পাঁচ বছর ধরেই আমার কিছু ভালো লাগে না। আমার পঙ্গুত্ব আমাকে ভালো না লাগাটা বেশ ভালভাবে শিখিয়ে দিয়েছে। আমার দুইটা পা নেই। হাঁটুর ঠিক উপর থেকে কাটা। পা কাটাটা খুব একটা ভালো হয়নি। ডান পা টা একটু বেশি কেটে ফেলেছে। আবার বাম পা এর হাড্ডিটার সম্মুখভাগ কেমন জানি অমসৃণ। মনে বড় দুঃখ……
# বৃষ্টি
মাঝে মাঝে বৃষ্টিতে ভিজতে হয়, বৃষ্টির জলে নাইতে হয়, বৃষ্টির বানে ভাসতে হয়। কিন্তু বৃষ্টিতে চোখ ঝাপসা করা একদম ঠিক না!
# অদ্ভুত বৈপরীত্য
শারীরিক অসুস্থতা অনেক সময় ঘুমোতে দেয় না, আবার অনেক সময় শুধু ঘুম পারিয়েই রাখে! কি এক অদ্ভুত বৈপরীত্য!
# কষ্ট
পৃথিবীতে অনেক ধরণের ব্যাধি আছে, তার মধ্যে দু'টি অন্যতমঃ শ্বাসকষ্ট ও মনোকষ্ট। দু’টোর সাথেই কষ্ট ওতপ্রোতভাবে জড়িত! এমনকি আক্ষরিকভাবেও।
# প্রিয় পাথর
আমার খুব প্রিয় একটা পাথর আছে! তার নামও দিয়েছি আমি!!! মাঝে মাঝে তাকে আমি ডাকি ৯, কখনো বা ৬! যখন রেগে থাকি তখন তাকে আমি ১৩ বলে ডাকি! মন ভালো থাকলে ৩ ও ডাকি!!! পাথর কোনো সাড়া দেয় না। আমি আমার নিজেরও একটা নাম দিয়েছি, বোকা মানুষ! পাথরের সাথে তো বোকা মানুষই কথা বলে!!!
# যেদিন বাতাস হবো
আমি যেদিন বাতাস হবো, সেদিন আকাশ ঘন অন্ধকারে ছেয়ে থাকবে। আমি চাই না সেদিন আমি ছাড়া আর কোনো বাতাস থাকুক! আমি সেদিন ঘুরে বেড়াবো ইচ্ছে মতন! আমার ইচ্ছেটা কিন্তু খুব খুব ছোট, ঘুরে বেরিয়ে ক্লান্ত হবো না। আচ্ছা, বাতাস কি কখনো ক্লান্ত হয়? আমি জানি না ঠিক।
# সুপারম্যান
সুপারম্যান সুপারমুনের (Super Moon) সময় এসে দেখলো এ পৃথিবী তার নয়, তাই সে ফিরে গেলো তার জগতে। জগৎ বড্ড আজব জিনিস, এক জগতের মাঝে অন্য জগতের বাসিন্দা থাকতে পারে, কিন্তু আপন হতে পারে না!
# নির্মল বাংলা
ভাবুনতো, আমাদের দেশের সকল অপরাধীরা কাল একটা সংগঠন ঘোষণা করলঃ “নির্মল বাংলা”। আর কাল থেকেই এ সংগঠনের কারো কোনরূপ সাজা হলে সংগঠনের পক্ষ থেকে দুর্বার আন্দোলনের মাধ্যমে সেই সাজা প্রতিহত করা হবে, তাহলে ব্যাপারটা কেমন হবে?
ভাবার সময়টা আসলে অনেক আগেই চলে গিয়েছে।
# ওয়ান টেক
আমার মতে পৃথিবীর সকল মানুষের জন্ম সার্থক! সবাই পৃথিবীতে তার নিজ নিজ রোলটা প্লে করে স্ক্রিন থেকে সরে যায়। ওয়ান টেকের এ জীবনে ব্যর্থতা বলে কিছু নেই। ব্যর্থতার সংজ্ঞা মানুষ নিজেই তৈরি করে। আসলে কারো ব্যর্থ হবার চান্সই নেই, একটা গল্পে সব রোল গুরুত্বপূর্ণ, সেটা যত ছোটই হোক না কেন। গল্পের লেখক ছাড়া অন্যেরা সেটা উপলব্ধি করতে পারে না।
# শেষ মুহূর্ত
জীবনের শেষ মুহূর্তে মানুষ কিছু চায় না, বাঁচতে চাওয়া ছাড়া। আর সুস্থ সবল অনেকেই মূহুর্তে মূহুর্তে মরতে চায়। এখানে শক্তির নিত্যতা সূত্রের মত বাঁচতে চাওয়ার পরিমাণ আর মরতে চাওয়ার পরিমাণ সমান হয় না। বাঁচার আকুতির কাছে সবকিছু হেরে যায়।
# জীবন বই
জীবনকে একটা বইয়ের সাথে তুলনা করলে এর মাঝে কিছু পৃষ্ঠা এমন থাকে যে আমরা চাই না এ পৃষ্ঠাগুলো আমাদের জীবন বইয়ে থাকুক। কিন্তু আমরা আবার পৃষ্ঠাগুলো ছিঁড়েও ফেলতে চাই না! মাঝে মাঝে আমরা সেসব পৃষ্ঠাগুলো উল্টে পাল্টে দেখার কৌতুহল সংবরণ করতে পারি না বলেই এমন হয়।
# স্বপ্নদের ডুব দেয়া
জীবনে প্রত্যেকের কিছু স্বপ্ন থাকে, কিছু স্বপ্ন যেমন পূরণ হয় তেমনি কিছু স্বপ্ন জমতে থাকে। জমতে জমতে একসময় তা এত গভীরে ডুব দেয় যে তা আর এ জনমে পূরণ করা হয়ে উঠে না।
# সাদা-কালো স্বপ্ন
স্বপ্ন সাদা-কালো। সাদা-কালো জগতে অনেক কিছুই মিথ্যে রঙে রাঙানো যায় না। তাই আমার কাছে কল্পনার জগতটা বাস্তবের চেয়ে শতগুণ সত্য।
# জীবন সিঁড়ি
উপরে উঠার সিঁড়ির পরের ধাপটা দেখা যতটা জরুরী তারচেয়ে জরুরী হল নীচের অতিক্রম করা ধাপগুলোর যত্ন নেয়া।
# শেষ কথা
একটা চিন্তা হঠাৎ হঠাৎ মনে আসে, জীবনে চলার পথে অনেকের সাথেই শেষবারের মত কথা বলা হয়ে গেছে! বেঁচে থাকতে আর কথা হবে না! একদমই না!
# বন্ধ চোখ
চোখ বন্ধ করলে আরেকটা চোখ খুলে যায়। তার দৃষ্টিসীমা অসীম। নিজেকে সুপারম্যান মনে হয় তখন। অসীম গতিতে ছোটা যায়, তিমির সাথে সাঁতরানো যায়, যায় বাজপাখির সাথে তাল মিলিয়ে উড়া! সত্যিকার অর্থেই উপভোগ করা যায় এ 'দৃষ্টিভ্রমণ'।
# ইন্সটাগ্রাম
রাতজাগা তারারা ফেসবুক ওয়ালে ঢু মেরে দেখল তাদের নিয়ে আর কোনো কবিতা, গল্প লেখা হয় না! বিষণ্ণ মনে ইন্সটাগ্রামে গিয়ে তাদের মন ভালো হয়ে গেলো। পৃথিবী এখন ছবিময়!
# ভালোবাসার আধিক্য
অধিক ভালোবাসাও খারাপ! অধিক ভালোবাসা এক পক্ষের প্রতি অপরপক্ষের দুর্বলতা প্রকাশ করে, আর পৃথিবী দুর্বলের জায়গা নয়। ভালোবাসায় দুর্বল লোকের ভালোবাসার মূল্য অপরপক্ষ দিবে না এটাই স্বাভাবিক! তাই দুর্বল, তুমি মন খারাপ করোনা, তুমি সঠিক আছো। তুমি তোমার মত কোনো দুর্বলের সন্ধানে থাকো, তারপর না হয় ভালোবেসো! তবে সবকিছুর চূড়ান্ত লেভেলে হতাশা ছাড়া আর কিছু থাকে না, একমাত্র ব্যতিক্রম ধর্মীয় উৎকর্ষতা। অন্য সবকিছুর চূড়ান্ত অর্জন লাভের পর তোমার মস্তিষ্ক হতাশ হয়ে পড়বে!
# সুসজ্জিত বিছানা
সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে বিছানাটা গুছিয়ে অন্য কাজে হাত দেয়া উচিত। সারাটা দিন হয়তো ভালো কাটবে বা মন্দ বা একেবারে ম্যারম্যারে!
কিন্তু দিনশেষে ঘরে ফিরে একটা গোছানো বিছানাতো অন্তত থাকবে তোমাকে প্রশান্তি দেয়ার জন্য!
দিনে অন্তত একটুখানি সময় কাটুক না ভালো!
# ঢাকার জীবন
আমার ঢাকার জীবন আকাশ এক নির্মম চাদরে ঢেকে আছে। আগের সেই উচ্ছলতা আর অনুভব করি না। সকাল থেকে সন্ধ্যা, সন্ধ্যা থেকে রাত, রাত থেকে আবার সেই সকাল অবধি সময়টাকে গিলে খাচ্ছি! একদিন ঠিক বমি করে সব সময় দিয়ে যাবো এ পৃথিবীটাকে।
# সময়
সময়টাকে আমি দেখি বেলুনের মত, একই সময়কে ভিন্ন ভিন্ন মানুষ ভিন্ন ভিন্ন ব্যাপ্তি নিয়ে অনুভব করে। কেউ কেউ আলসেমী করে হোক বা না জেনেই হোক, সারাজীবনে সময়ের বেলুনটা ফোলায় না, তার সময়ের শুরু আর শেষের মাঝখানটা হুট করেই কেটে যায়। আর কেউ কেউ এমনও থাকে যারা অনেক ছোট্ট ব্যাপ্তির জীবনের বেলুনকে ফুলিয়ে ফুলিয়ে সময়টাকে করে তোলে মহিমান্বিত, ভীষণ ভালো লাগা কিছু অনুভূতি নিয়ে সে শেষ করে তার সময়ের যাত্রা!
সময়টাকে বাড়িয়ে নাও, একই সময়ে অন্যের চেয়ে বেশী বাঁচতে শিখো, অন্যকেও বাঁচতে শিখাও।
# সুখের সন্ধান
জীবনে সবকিছু বোধহয় জোড়ায় জোড়ায় থাকে। দেখা যাবে সবচেয়ে গোছালো কোনো এক মানুষ বা সবচেয়ে অগোছালো কোনো এক মানুষ, দুজনই সুখী। আবার এমনও দেখা যাবে সবচেয়ে গোছালো কোনো এক মানুষ বা সবচেয়ে অগোছালো কোনো এক মানুষ, দুজনই অসুখী। জীবনকে গোছানোর পিছনে না ছুটে তাই সুখ খুঁজতে হবে, ভীষণভাবে!
# আধিক্য-ঘৃণা
যে কোনো কিছুর আধিক্যই খারাপ। কোনো কিছু নিয়ে বাড়াবাড়ি শেষ পর্যন্ত এক ধরণের ঘৃণা তৈরি করে।
# বৃষ্টি ও চশমা
চশমা চোখে বৃষ্টি দেখা..... তারপর?.....
তারপর চশমা হাতে বৃষ্টি দেখা..... তারপর?.....
ভেজা চোখ, শ্রান্ত মনে হেঁটে চলা.....
# বৃষ্টি ভেজা মাটি
দু'দিন পর বৃষ্টি নামবে। আকাশ ভাঙ্গা বৃষ্টি। বৃষ্টির মাঝে ছাতা হাতে আমি থাকব না এ শহরে। এ শহরটা বৃষ্টিতে ধুয়ে যায় না, এর মাটি বৃষ্টিকে গিলে খায় না। এ মাটি সেই যে রক্তের স্বাদ পেয়েছিল একবার! তারপর থেকে রক্ত খায়!
# সুখ
সত্যিকার ভালো থাকা মানুষদের চেয়ে ভালো থাকার অভিনয় করা মানুষদের অনেক বেশী সুখি মনে হয়।
# গাধা
গাধার পালের একটা গাধা সবচেয়ে বড় গাধা!
সে জানেই না সে একটা গাধা, বড়ত্ব তো অনেক পরের বিষয়!
# মানুষ চেনা
গুরুর আশীর্বাদে আমি মানুষ চিনতে শিখছি। মানুষ প্রযুক্তির চেয়ে দ্রুত বদলায়। প্রযুক্তির পরিবর্তন একটা ছক মেনে হলেও মানুষের পরিবর্তনটা কিছু মানে না। বড়ই বিতিকিচ্ছির ব্যাপার।
# সুখ - দুঃখ
সুখ সবার সাথে শেয়ার করা যায় কিন্তু একান্ত কিছু দুঃখ থাকে যেগুলো শেয়ার করা যায় না। সেগুলো তুলে রাখতে হয় এমন কারো জন্য যাকে হয়তো কখনো দুঃখগুলো সেভাবে বলা হয়ে উঠবে না! মনুষ্য জাতি বড়ই অদ্ভুত।
# বিশ্বাস
মিথ্যাবাদী মানুষকে বিশ্বাস করতে হবে বেশী বেশী!!! মিথ্যাবাদীকে বুঝতে দেয়া যাবে না যে তোমার মিথ্যা আমি ঠিকই বুঝি! জেনেশুনে ঠকার মাঝেও একটা পজিটিভ দিক আছে, তুমি জানবে যে তুমি কতটুকু ঠকছো! কিন্তু কখনো কি ভেবে দেখেছো মানুষ কখন জেনেশুনে ঠকে!!!
# বেলাশেষে
একটা নিরবিচ্ছিন্ন অবসরের আশায় সারাটা জীবন কাটিয়ে বেলাশেষে সঙ্গী খোঁজার বৈশিষ্ট্য মানুষকে করেছে অনন্য। মানুষ তার মনের গহীনে একা একা থাকার বাসনা পুষে সবার সাথে সময় কাটিয়ে দিয়ে একসময় চরম একাকীত্বের জগতে প্রবেশ করে।
# মানুষ ও প্রকৃতি
জন্মগত ভাবেই মানুষ প্রকৃতির উল্টো পথে চলে! কথাটা শুনতে কেমন লাগছে, তাই না? আসলে জন্মের পর থেকে শুরু হয় আমাদের বুড়িয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া, সময়ের সাথে সাথে আমরা বুড়িয়ে যাই। একটু অবসর যাপনে আমাদের বুড়িয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া থেমে থাকে না, এটা একটা চলমান প্রক্রিয়া। অন্যদিকে প্রকৃতিকে অবসর দিলে সে আরো প্রাণবন্ত হয়ে উঠে, সে হয়ে উঠে আগের চেয়ে সুন্দর, মহিমান্বিত।
# গণনা
আজ থেকে গণনা শুরু! আচ্ছা গুণতে গুণতে থামতে হয়, জানো? আজ না হয় ১, কাল পরশু বা তরশু গুণবো না হয়তো! আবার কোনোদিন এসে হয়তো বলবো আজ ৮ বা ৯ অথবা ৩০! তারপর একদিন আর আসবো না গুণতে, তখন তুমি গুণতে শুরু করো ১ থেকে! কতদিন হলো আমি গুণছি না সেটা গুণতে থেকো!
# চিড়িয়াখানা
বাংলাদেশ একটা আজব চিড়িয়াখানা, এখানে বাঘে যা খায়, গাধাকেও তাই খেতে দেয়া হয়। বাঘ তাই মাঝে মাঝে গাধার মত আচরণ করে, আর গাধা করে বাঘের মত! বাংলাদেশীরা আবার অতিরিক্ত কিউট জাতি, সবাই নিজেকে বাঘ ভাবে, তাই আজকাল সবার আচরণ গাধার মত হয়ে যাচ্ছে। সব দোষ ওই খাবারের, একই খাবার কে দিতে বলসে!!!
# Life is beautiful
সকাল সাতটা বেজে সাত মিনিটে মাত্র সাতবার চোখের পলক ফেলে সাততাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়লাম! ঘণ্টা তিনেক! এ অল্প একটু সময় একান্তই আমার নয়!
"Life is beautiful" কথাটা “জীবন সুন্দর” কথার চেয়ে সুন্দর!
"Life is beautiful" মুভিটা এর চেয়ে আরো সুন্দর।
# অতীত বর্তমান ভবিষ্যৎ
বর্তমানটা এত দ্রুত অতীত হয়ে যায় যে আমরা বুঝতে পারি না আমরা যা কিছু ভাবছি সবটাই আসলে অতীত! বর্তমান নিয়ে ভাবনাটা আসলে ভবিষ্যৎ নিয়েই ভাবা বা প্রকৃতঅর্থে বলতে গেলে আমরা ভবিষ্যৎ নিয়ে আমাদের অতীতেই পরিকল্পনা করি! আমার লেখার প্রতিটা শব্দ লিখা শেষ হবার মুহূর্তে বা তারও আগে অতীতে প্রবেশ করছে! কি রোমাঞ্চকর! সময়ের শুরু এবং শেষ দুইটাই আছে। সময়হীন অনুভূতি কেমন হবে সেটা আমাদের পক্ষে বোঝা সম্ভব নয়, আসলেই!
# Cloud Number 9
একবার আকাশের সব মেঘেদের নামকরণ করা হলো: ১, ২, ৩, ৪ . . . . . ইনফিনিটি পর্যন্ত। তারপর আমাকে বলো হলো যে কোনো একটি মেঘ বেছে নাও! আমি খুশিমনে ৯ নম্বর মেঘটা বেছে নিলাম! কারণটা কি জানো? কারণ আর কিছুই না, Bryan Adams এর একটা গান আমার খুব প্রিয়- Cloud Number 9! সবার একটা করে মেঘ থাকুক, সবাই বৃষ্টিতে ভিজুক!
# মন খারাপের বাস
যখন তুমি তোমার খারাপ লাগাদের ভালোবাসতে শিখবে, তখন পৃথিবীতে তোমার চেয়ে সুখে কেউ থাকবে না। খারাপ লাগাদের ভালোবাসাটা খুব কি কঠিন! হুম, অনেক কঠিন।
তবে মজার বিষয় হলো পৃথিবীর সকল কঠিন জিনিস সমাধানের একটা সহজ শর্টকাট থাকে। তোমাকে সেই শর্টকার্ট পথটা খুঁজে বের করতে হবে। সবাই সেটা পারে না বলেই আমাদের আশেপাশে এত এত মন খারাপের বসবাস।
# Summer of 69
ধরো তোমাকে বলা হলো ১ থেকে ১০০ পর্যন্ত যে কোনো একটা সংখ্যা মনে মনে চিন্তা করো। প্রায় ১০০% লোকই ১ বা ১০০ সংখ্যা দুটি চিন্তা করবে না! অবাক করা বিষয় না? মানুষ কখনো সর্বনিম্ন স্তরে বা ধরাছোঁয়ার বাইরের স্তরে যেতে চায় না, তার মন পড়ে থাকে মাঝামাঝি কিছু একটায়! এ ছাইপাশ কেনো লিখলাম! Summer of 69 গানটা শুনছিলাম, ৬৯ আমাকে ১ আর ১০০ এর মাঝে নিয়ে গেল! যত্তসব !!!
# হাজার বছর পর
হয়তো হাজার বছর পর পৃথিবীর কোন গহীন জঙ্গলের তথাকথিত সভ্যতার আলো না পাওয়া জনগোষ্ঠী প্রকৃত সভ্য হয়ে সমগ্র পৃথবীতে আবার ছড়িয়ে পরবে, আর অবাক হয়ে দেখবে তাদের পূর্বপুরুষদের রেখে যাওয়া স্থাপত্য। তারা কি জানবে এ পূর্বপুরুষরা ঠিক কবে পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়েছিলো? কিংবা বিলুপ্ত হওয়ার কারণ? না জানলেও কিছু আসে যায় না, সময়ের সাথে যে জাতির মানবতা ক্রমান্বয়ে বর্বরতার চূড়ান্ত রূপ ধারণ করেছিল তারা কি নিজেদেরকে ইতিহাসের পাতায় ঠাই পাওয়ার দাবিদার ভেবেছিল!
# প্রোসথেটিক পা
কাল থেকে আবার আমি সকালে হাঁটতে বের হবো, প্রোসথেটিক পা জোড়া আজই পেলাম হাতে! বেশ শক্ত গড়নের। থ্রিডি প্রিন্টেড পা দেখে বোঝার উপায় নেই এটা আমার সত্যিকারের পা নয়। ডাক্তার বার বার বলে দিয়েছেন যেন আমি ভুলেও দৌঁড়ানোর চেষ্টা না করি। কি আজব চিন্তা ভাবনা ওনার! আমি কি পাগল যে এ পা নিয়ে একটা বিতিকিচ্ছিরি কান্ড করে বসবো!
# প্রভুত্ব ও দাসত্ব
মানুষ প্রভুত্বের মাঝে দাসত্ব আর দাসত্বের মাঝে প্রভুত্বের অনুসন্ধান করে। পরিতাপের বিষয় সঠিক সন্ধান পাওয়ার পরও মানুষ প্রভুত্ব আর দাসত্বকে গুলিয়ে ফেলে।
# অবুঝ মানুষ
মানুষের ধ্বংসের একটা মূল কারণ সে ঠিক তারই মত আরেকজন মানুষের ভালো পরামর্শও মন থেকে মানতে পারে না। তার মন তাকে প্ররোচিত করে অস্বাভাবিক কোন সত্ত্বার আনুগত্যের দিকে। কোনোভাবে সে অস্বাভাবিক সত্ত্বার দেখা পেলেও সে তাকেও মানতে পারে না!
# তেলের শিশি
সমাজের অনেক বড় বড় মানুষদের দেখি কর্মস্থল থেকে বিদায় বেলায় দীর্ঘদিনের তেলের শিশিটা সাথে রাখেন না! এটা খুব অন্যায়! শেষবারের মত শিশির সব তেল ঢেলে দেয়ার সুযোগ দেইয়া উচিত।
# লোক দেখানো
লোক দেখানো ভালো থাকার সর্বপ্রথম শর্ত হলো তোমাকে অনেক সুখী সুখী একটা ভাব সারাক্ষণ ফুটিয়ে রাখতে হবে- তোমার চলনে, তোমার বাচন ভঙ্গিতে, সবচেয়ে গুরত্বপূর্ণ তোমার ফেসবুক ওয়াল আর স্টোরিতে! আমাদের লোক দেখানো সুখ অনেকের লোক দেখানো আনন্দের কারণ হয়!
আমরা আমাদের দুঃখগুলো লুকিয়ে রাখি মনের গহীনে, দুঃখরা হয় কালো, অন্ধকারাচ্ছন্ন, দুঃখদের রাজ্যে শুভ্রতার কোনো ঠাই নেই। কালেভদ্রে টুকটাক দুঃখ যদি ভুলক্রমে চলে আসে আমাদের মুখাবয়বে, তবে তা অনেকের লোক দেখানো দুঃখের কারণ হয় বটে।
# গতানুগতিক ভাবনা
একটা সময় তোমাকে অবশ্যই গতানুগতিক পন্থায় চিন্তা-ভাবনা করতে হতে পারে। গতানুগতিক ব্যাপারটা অতটা খারাপ না। একটা "Established" গন্ধ পাওয়া যায়।
# নিউক্লিয়াস ও ইলেকট্রন
আগে মাঝে মাঝে নিউক্লিয়াস থেকে দূরে যাওয়া হতো। প্রতিবারই মনটা খারাপ থাকতো তখন। কখন ফিরবো সেটা নিয়ে একটা তাড়না অনুভব করতাম। এখন আর নিউক্লিয়াস নেই, ফিরবার তাড়াও নেই। সবকিছু এই বিশের (২০২০ সাল) বিষাক্ততায় বিদীর্ণ, বিবর্ণ। আমি ইলেকট্রন আজ তাই পুরনো কক্ষপথ ছেড়ে ছুটে চলেছি, উদ্দেশ্যহীন।
# বিরতি
মাঝে মাঝে আমাদের থামতে হয়, কিছুটা দম নেওয়ার জন্য হলেও। হয়তো কিছুটা পেছন ফিরেও যেতে হতে পারে, আরো বেশী শক্তিশালীভাবে ফিরে আসার জন্য। সময়ের শেষ মুহূর্তে নেয়া প্রতিটা পদক্ষেপ অমূল্য। সময় আমাদের শক্তিশালী করে, আবার দুর্বলও। নির্ভেজাল থাকার মন্ত্র হল নিজের শক্তিশালী সময়ে নিজের দুর্বল সময়ের জন্য কিছু একটা করা যাতে আফসোস করতে না হয়। বাস্তব জীবনের শিক্ষা অনেক সময় অনেকটা নির্মম হয়।
# দূরত্বই ভালো
অণু পরমাণুর ফাঁকা জায়গাদের বাড়িয়ে বা কমিয়ে মানুষ নিজেকে বড় বা ছোট করতে পারে না। যদি পারতো তাহলে খুব সম্ভবত সবাই আকাশটা ছুঁতে চাইতো! আমি হয়তো নিজেকে আরো ক্ষুদ্র করে ঘাসের মাঝে গা এলিয়ে আকাশটা দেখতাম। কিছু জিনিস দূর থেকেই সুন্দর, তাদের ছুঁয়ে দেখতে হয় না!
# মিসির আলির অপেক্ষা
হুমায়ূন ভাই মারা গেছেন জেনেও প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে মিসির আলি তার অপেক্ষায় বসে থাকেন। অনেক কথা জমে গেছে, হুমায়ূন ভাই ছাড়া এসব কথা কাউকে বলে শান্তি পাওয়া যায় না। আচ্ছা, হুমায়ূন ভাই কি এখন রসায়ন চর্চা করেন না কি গল্প লিখেন!
# সাহস জোগানো মানুষেরা
কিছু কিছু দিন অনেক মানুষের অনেক যন্ত্রণায় কাটে, হাসিমুখের সে যন্ত্রণা গিলে ফেলা ছাড়া কিছুই করার থাকে না আসলে। তবুও কিছু মানুষ সাহস দেয়, সে সাহসে আশায় বুক বাঁধে কিছু কিছু মানুষ! সাহস জোগানো মানুষদের জন্য নিজের কলিজাটা কেটে রান্না করে খাওয়াতে মন চাইলেও শেষ পর্যন্ত সেটা করা হয় না, কারণ এখনো মানুষ মানুষের কলিজা খায় না।
# আপেক্ষিক সুখ-দুঃখ
পৃথিবীর সব সুখ, সব দুঃখ আপেক্ষিক।
আমার দুঃখ অন্য কারো সুখ হোক সেটাই কাম্য।
আমার সুখেরা কারো দুঃখের কারণ না হওয়ার জন্য হলেও আমার সুখী হওয়াটা উচিত নয়।
# ইনফিনিটি
আচ্ছা, মহাবিশ্বের শুরুতে যেমন সময় ছিলো না, মহাবিশ্বের শেষেও সময় থাকবে না! সবটাই একটা ইনফিনিটির খেলা! মাঝখান থেকে আমরা শুধু শুধু সময়টাকে অন্যসব ডাইমেনশন দিয়ে পাল্টাতে চাই। সবটা জেনেও আমাদের এ চেষ্টা করাটাই আমাদের অমরত্ব দেয়।
# তারা গণনা
একটা সময় ছিলো যখন গভীর অন্ধকার কোন রাতে আকাশের 'তারা'-দের দেখলে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকতাম। কখনো কখনো 'তারা'-দের গুণতে শুরু করতাম, এমনও হয়েছে!
আমার কাছে কখনোই মনে হতো না আমি 'তারা'-দের গুণে শেষ করতে পারবো না! কিন্তু একটা সময় পর ঠিকই আমি 'তারা'-দের গণনা করা বন্ধ করে দিতাম, আমার মনে হতো কি হবে গুণে? যতটুকু সময় কাটাতে চেয়েছিলাম ততটা বা তারও কিছুটা বেশী সময় আমি তো কাটিয়েছি 'তারা'-দের গুণে গুণে! আমার তো প্রয়োজন ছিলো সময় কাটানো!
# মুছে ফেলা গদ্য
মাঝে মাঝে বিশাল বিশাল গদ্য লিখে মুছে ফেলতে হয়। মাঝে মাঝে এমন সব কিছু করতে হয় যা আমরা করতে চাই না, এটাই নিয়তি। আমার ভালো লাগছে এই ভেবে যে আমি আজ বিশাল একটা গদ্য লিখে মুছে ফেলেছি! যে গদ্য পড়ে একটা মানুষ কষ্ট পাবে সেটা না লিখলেই বরং ভালো ছিলো। মাঝখান থেকে আমার কিছু মুহূর্ত চলে গেলো, খুব ফালতু হলো বিষয়টা!
# মুছে ফেলা গদ্যরা এখন কল্পনারাজ্যে
আমার একটা কল্পনারাজ্য আছে। ঠিক করেছি সে রাজ্যে একটা খাতায় লিখে রাখবো সব মুছে ফেলা গদ্যদের।
আচ্ছা, Inception মুভিটার কথা মনে আছে!
# জীবনের হিসাব
জীবনের হিসাবটা অনেক কঠিন। তাই সম্পর্কের যোগ-বিয়োগ অনেক ভেবে চিন্তে করতে হয়। সমস্যা হলো সবার ভাববার ক্ষমতা ভালো নয়।
# শেকলে বাঁধা
শেষ কবে আকাশে উড়েছিলাম আমি? আমার পায়ের শিকলে জং ধরেছে অনেক জায়গায়। একটু চেষ্টা করলেই কি উড়ে যেতে পারবো? হয়তো, হয়তো না! ঘুম জড়ানো চোখে আমি জং ধরা শেকলের দিকে তাকিয়ে থাকি, আসলেই কি আমি শেকলে বাঁধা? নাকি সবটাই আমার ঘুম ঘুম চোখের তৈরি কৃত্রিম বাস্তবতা! ঘুমিয়ে পড়ার আগে প্রতিবারই ভাবি ঘুম ভেংগে গেলে শেকলটা ভেঙে আমি উড়ে যাবো। হয়তো ঘুমের মাঝেই উড়ে যাওয়ার চেষ্টা করে বসবো একদিন!
# মন ভালো করার টোটকা
সমগ্র পৃথিবী জয় করার পরও কারো মন যদি খারাপ থাকে তাহলে তার মন খারাপটা কেমন হবে? যদি মন খারাপের কারণটাও থাকে অজানা? মন ভালো করার টোটকাগুলো একসময় যখন তার কার্যকারিতা হারিয়ে ফেলে, তখন মানুষের মনের কি চিরপ্রস্থান ঘটে সুখের নিবাস হতে? নাকি সে খুঁজতে থাকে নতুন কোনো পথ? মাঝে মাঝে সময় আমাদের নিয়ে বড্ড বেশী এক্সপেরিমেন্ট করে ফেলে, তখন ফেল না করে উপায় থাকে না।
# আহা! জীবন
শেষ পর্যন্ত বৃক্ষ বাড়িয়া উঠিল আর তাহার পাতার ছায়ায় বাড়িতে থাকিল এক গুচ্ছ স্বপ্ন। বৃক্ষের একটাই দুঃখ, তাহার ক্ষণস্থায়ী জীবনের কারণে তাহার ছায়ায় বাড়িতে থাকা স্বপ্নগুলো অমরত্ব লাভ করিতে ব্যর্থ হইবে। আহা! জীবন একটা আফসোসের বস্তু বটে।
# স্বপ্নের সঞ্চারণ
মারা যাওয়ার পর পৃথিবীর সবচেয়ে গোছানো লোকটার গুছিয়ে রাখা কাজগুলো কেউ না কেউ অগোছালো করবে, হয়তোবা আরও গুছিয়ে কাজগুলো করাও হতে পারে। মৃত ব্যক্তির স্বপ্নগুলো জীবিত ব্যক্তির মাঝে সঞ্চারিত হবে, যা হয়ে আসছে সেই আদিকাল থেকে।
# মানুষের শ্রেণীবিভাগ
পৃথিবীর মানুষের সবচেয়ে ভালো শ্রেণীবিভাগ কি হতে পারে? (১) মন্দ ও (২) অতি মন্দ। আমি মন্দতর। (আমি যে মন্দতর তার প্রমাণ কিন্তু দিয়ে দিলাম, নিজেকে ২ শ্রেণীর একটিতেও না রেখে আলাদা একটি শ্রেণী করে নিলাম।)
# একাকীত্বতা
একাকীত্বতা আল্লাহ্ সুবহানাহু তাআলার নিকটবর্তী হওয়ার সুযোগ যেমন দেয়, তেমনি শয়তানের দ্বারা প্ররোচিত হওয়ার সম্ভাবনাও তৈরি করে। দিন শেষে যা জয়ী হয় তা হলো নিয়তি।
# কষ্টের মাপকাঠি
প্রত্যেকটা মানুষ তার জীবন থেকে কিছু স্বতন্ত্র শিক্ষা গ্রহণ করে থাকে যা অন্য কাউকে কোনভাবেই বুঝানো সম্ভব না। কারো জীবনের সমস্যা হয়তো অন্য কারো জীবনের আশির্বাদ। সবচেয়ে ভয়াবহ বিষয় যেটা সেটা হলো, প্রত্যেকটা মানুষ ভাবে তার সমস্যাটাই সবচেয়ে বড়, এত বড় সমস্যা আর কারো জীবনে নেই। সমস্যার বিশালতার বা কষ্টের তীব্রতার কোন মাপকাঠি নেই বলেই এমনটা হয়। কারো জীবনে এমন কিছু ঘটতে পারে যার ব্যথার তীব্রতা হয়তো স্বজন হারানোর চেয়ে বেশী! মানুষ হিসেবে আমাদের সকলের উচিত অন্যের ছোট বা বড় কষ্টগুলোকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য না করা।
# মন খারাপ ঘটনা
একটা মানুষকে যদি বলা হয়, আচ্ছা তোমার সবচেয়ে মন খারাপ করা ঘটনা কোনটা? সে কিছুটা সময় ভেবে একটা উত্তর করবে। বেশীরভাগ ক্ষেত্রে সে পরে ভেবে দেখবে যে এর চেয়ে কষ্টের ঘটনা তার জীবনে আছে, কিন্তু ওই মুহূর্তে মনে পড়ে নি। কিন্তু আমার কাছে আমার সবচেয়ে কষ্টের মুহূর্ত আমার মায়ের মৃত্যু সংবাদ নিজের কানে শোনা, আমার বাবাকে নিজের চোখের সামনে মৃত্যুবরণ করতে দেখা। আমার জীবন এর চেয়ে কষ্টের ঘটনা ভবিষ্যতে ঘটতেও পারে, কিন্তু আমাকে কেউ জিজ্ঞেস করলে এ দুটো ঘটনাই আমার মাথায় আসবে, আর কিচ্ছু আসবে না!
# নিঃসঙ্গতা
আজ আব্বা-আম্মা ছাড়া প্রথম ঈদ-উল-আযহা। এতিম বলতে যা বোঝায় আমি এখন তাই। একাকী চলা শিখেছি অনেক দিন, তবুও বর্তমানের একাকীত্বতা অনেক যন্ত্রণাদায়ক। গত ছয়মাস আমার একদম ভালো কাটেনি, দিনের অনেকটা সময়ই কাটে অবসাদে। এ অবসাদ আমাকে হয়তো সহসাই নিঃশেষ করে দিবে, আল্লাহ্ ভালো জানেন। মায়ের সাথে শেষ বার একটু কথা বলার ইচ্ছাটা তপ্ত মরুভূমিতে পিপসায় কাতর কোনো অভিযাত্রীর পানির জন্য হাহাকারের চেয়ে কোটি গুণ বেশী। অভিযাত্রী কোনোভাবে পানি পান করতে পারলেও আমার আর মায়ের সাথে ইহজীবনে কথা বলা হবে না!
# যে চাওয়াটা একবারই Valid
আর ক'দিন বেঁচে থাকবো জানি না। জানতে চাইও না। আমার কোন অগ্রাধিকার তালিকা (Priority List) করা নেই যে মৃত্যুর দিনক্ষণ জানতে পারলে হুটহাট সেটা করে ফেলবো। সবসময় যেটা পেতে ইচ্ছে করে তার চেয়ে মনে হয় মাঝে মাঝে পেতে ইচ্ছে করা বস্তুরা বেশী আকর্ষণীয়। সে হিসেবে মৃত্যু নির্ধিধায় সবচেয়ে আকর্ষণীয়, সবচেয়ে সত্য চাওয়া। যে চাওয়াটা জীবনে একবারই Valid.
# কষ্টের দুষ্টচক্র
পৃথিবীটা এমন যে এখানে কষ্টে থাকা মানুষের সংখ্যাটাই বেশী। দিন দিন এটা বাড়বে বলেই বিশ্বাস। মানুষ এখন বিনা কারণে অপরকে কষ্ট দেয়। কষ্ট দিয়ে সেটা উদযাপন করে! আবার সে উদযাপনে কোন এক বিশেষ জনকে নিমন্ত্রণ না জানিয়ে তাকে ইচ্ছাকৃত কষ্ট দেয়া হয়। সে বিশেষ জন আবার সে কষ্টের বদলা হিসেবে তাকে কষ্ট দেয়...... এভাবে কষ্টের দুষ্টচক্র চলতেই থাকে।
# মানসিক চাপ
কিছু কিছু মানসিক চাপ অনেক ভয়ংকর। আস্তে আস্তে সে চিন্তার সবটাই গ্রাস করে নেয়, অনেকটা ক্যান্সার কোষের মতো। তার বিস্তার রোধ করতে কি করা প্রয়োজন তার অনেক ধর্মীয় ও প্রচলিত উপায় আছে। কিন্তু যখন কিছুতেই কিছু হয় না তখন নিজেকে সপে দিতে হয় সময়ের কাছে। একটা সময় পর অবস্থা ভালো হবে সে আশায়। যুগের পর যুগ মানুষ আশায় ভর করেই বাচঁতে চেষ্টা করে আসছে। সে চেষ্টায় আছে এক ধরণের নির্মলতা যা ভালোকে খারাপ আর খারাপকে ভালো হিসেবে উপস্থাপন করলেও মেনে নিতে খুব একটা খারাপ লাগে না।
# মৃত্যু ভয়
পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ভয় মৃত্যু ভয়। এটা একবার পেয়ে বসলে হয়তো মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সে ভয় কাটে না।
# নেড়ী কুকুর
একদল নেড়ী কুকুর (পড়ুন - কুত্তা) তাদের ল্যাজের বক্রতা পরিমাপ করতে এক গণিতবিদের কাছে গেল। গণিতবিদ সরলমনে বক্রতা মেপে দিলেন। সম্মানী বাবদ সকল কুকুর (পড়ুন - কুত্তা) এক এক ঘা বসিয়ে দিল গণিতবিদের হাতে।
# প্রকৃত জন্ম
মৃত্যুর কাছাকাছি আসিয়া সে বুঝিতে পারিল আসলে তাহা তার জন্ম বই কিছু নহে! মায়ের গর্ভে থাকাকালীন যাহার সঠিক পরিচর্যা হয় সে ই সুস্থ-সবল হইয়া ভূমিষ্ঠ হয়। এ পরিচর্যায় তাহার কিছুই করিবার সাধ্য নাই। কিন্তু এ যে তাহার অন্যরকম এক জন্ম হইতে চলিয়াছে তাহাতে কি সে সুস্থ-সবল হইবে না বিকলাঙ্গ হইয়া থাকিবে তাহা নির্ধারণে তার অনেক কিছুই করিবার ছিল। গড়পড়তা নয় মাসের পরিচর্যায় যে এত ফুটফুটে হইতে পারে, গড়পড়তা ৭০-৮০ বছরের পরিচর্যায় (বা অবহেলায়) তার জড়াজীর্ন জন্মগ্রহণ অত্যন্ত দৃষ্টিকটু!
# ঘটনার অন্তরালে
মহান আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা ঈমানদার, মুমিন বান্দাদের জীবনে কারণ ছাড়া কোনো ঘটনা ঘটান না। আমরা ভবিষ্যৎ জানিনা বলেই আমাদের জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনার কারণ তাৎক্ষণিকভাবে বুঝতে পারি না। বুঝতে না পেরে অনেক মন খারাপ করি, আল্লাহর প্রতি অভিমান করি। কিছু কিছু ঘটনা ঘটার অল্প সময় পরেই বুঝা যায় যে কিছুদিন আগে ঘটে যাওয়া খারাপ ঘটনাটাও আল্লাহর কাছ থেকে কত বড় নেয়ামত ছিল! আল্লাহ্ এর উপর পূর্ণ বিশ্বাস রেখে অন্তরে পাথর চেপে, সকল আবেগকে দমন করে অপেক্ষা করতে হবে সেই সময়ের জন্য যখন জানা যাবে ঘটনাটা আল্লাহর পক্ষ থেকে একটা নেয়ামত ছিল। আর চেষ্টা করে যেতে হবে আল্লাহর প্রিয়জন হওয়ার, ঈমানদার হওয়ার, মুমিন হওয়ার। আল্লাহ্ তার প্রিয় বান্দাদের নানান ধরণের কষ্ট দিয়ে পরীক্ষা করবেন। আমরাও কিন্তু আমাদের প্রিয় মানুষদের অনেক সময় কষ্ট দেই!
# মস্তিষ্কের উপহাস
আমাদের কল্পনার অতীতগুলোয় সুখ-দুঃখের সংমিশ্রণ থাকলেও আমাদের কল্পনার ভবিষ্যতে কোন দুঃখ আমরা রাখি না। এটা আমাদের নিয়ে আমাদের মস্তিষ্কের এক মহা উপহাস।
# মেনে নেয়া
মেনে নেয়া ছাড়া এ দুর্বল মানব জাতির কিছু আসলে করার নেই। নিজের দুর্বলতা ঢাকার ব্যর্থ চেষ্টা হিসেবেই মানুষ সব কিছু দিন শেষে মেনে নেয়।
# সুখ দুঃখের রঙ
সুখের অনেক রঙ থাকে, অনেক ছবি থাকে, অনেক স্মৃতি থাকে, সুখস্মৃতি.... দুঃখের রঙ একটাই- কালো, দুঃখের কিছু ছবি থাকে- মনের ক্যানভাসে, দুঃখের স্মৃতি থাকে- সত্যিকারের স্মৃতি, বাকি স্মৃতি মিথ্যা.....
# ইন শা আল্লাহ্
"ইন শা আল্লাহ্ সব ঠিক হয়ে যাবে" কথাটা সবসময় সঠিক না। বলা উচিত "ইন শা আল্লাহ্ আস্তে আস্তে পরিবর্তিত অবস্থার সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারবে"।
# ধর্মে বিশ্বাস না কি ধর্মান্ধতা?
"ধর্মে বিশ্বাস" আর "ধর্মান্ধতা" এ দুটো বিষয় এক পাল্লায় মাপতে বাংলাদেশীদের বিকল্প জাতি বর্তমান পৃথিবীতে আর কি আছে?
# লাঠিয়াল বাহিনী
গ্রামে একসময় লাঠিয়াল বাহিনী ছিল। এখন আর তাদের দেখা যায় না। লাঠি দিয়ে মারামারির মাঝে কোপাকোপির বিভীষিকা পাওয়া যায় না, এ কারণেই হয়তো!
# অন্ধকারের সূর্য
একদা এক গ্রীষ্মের দিনে সূর্যটা গিলে ফেললাম। চারদিকটা অন্ধকার হয়ে গেল। সেই অন্ধকারে সূর্যটা হাতরে খোঁজার চেষ্টা করে যাচ্ছে কয়েকজন অন্ধ মানুষ!
# আমাকে বললে?
ইদানিং একটা সমস্যায় পড়ছি, তা হলো কোনো কিছু মন খুলে বলা যায় না, বললেই অনেকে ভাবে তাকেই বললাম না তো?
# বাস্তবতা
বাস্তবতা সবসময়ই নির্মম। হয় সেটা নির্মম খারাপ, না হয় নির্মম সুখের, আর না হয় নির্মম ম্যারম্যারে পানসে!
# স্যরি
স্বপ্ন ভাঙ্গার কোন শব্দ হয় না। অনেক সময় স্যরি বলেও মনে শান্তি আসে না। অন্য কোন শব্দ নাই ???
# হিমু এবং আমি
আজ থেকে বহু বছর আগে হলুদ হিমু আমার কাছে এসেছিলো, তখন আমি চট্টগ্রাম থাকতাম। সেদিন অনেকটা পথ তার সাথে হেঁটেছিলাম আমি। আমার পরনে ছিলো নীল পাঞ্জাবী। তখনো চোখের সমস্যাটা তেমন ছিলো না, চশমা পরতে হতো না। খালি চোখে হিমুকে দেখে আমার মনে হয়েছিলো সে হিমু নয়, সে মিসির আলী! যখন তার কিছু ভালো লাগে না সে হলুদ পাঞ্জাবী গায়ে হিমু সেজে বেরিয়ে পড়ে।
তো সেদিনের কথা বলি। অনেকটা পথ একসাথে হাঁটলেও আমরা কোনো কথা বলি নি সেদিন। টাইগার পাসের রাস্তা ধরে হাঁটার মুহূর্তটা আজও মনে পড়ে, খুব সম্ভবত সেদিন আমি দ্বিতীয় মিসির আলী হয়ে যাই! দ্বিতীয় মিসির আলী হওয়ার পর থেকে আস্তে আস্তে আমার চোখের সমস্যা শুরু হলো। মিসির আলী সিগারেট খেলেও আমি খাই না, খুব উশখুশ লাগে। মাঝে মাঝে আমিও হিমু হয়ে বেরিয়ে পড়ি, তবে সে যেমন হলুদ পাঞ্জাবী পরে আমি তেমন পরি না, সে হেঁটে বেড়ায়, আর আমি রিকশায় ঘুরে বেড়াই।
একটাই মিল, দিন শেষে আমরা দু’জনেই একা!
# সংখ্যারেখা
সময়ের কাছে হেরে যাওয়াটা লজ্জার নয়, কষ্টের। সংখ্যারেখার শূন্য দাগে দাঁড়িয়ে -৫ আর +৫ নিয়ে ভাবছি। প্রতিটা ভাবনা যতটা বাস্তব তত বেশি অধরা। আমার দেয়া পেন্সিলের দাগগুলো মুছে ফেলার জন্য যে ইরেজারটা ছিল, সেটা -৫ আর ০ এর মাঝে হারিয়ে ফেলেছি, ০ আর +৫ এর মাঝে আমি আর চাইলেও তা পাবো না! সময় আমাদের চাওয়াগুলোকে পাওয়া না পাওয়ায় রূপ দেয়, প্রাপ্তিগুলোর রূপ-মাধুর্য আমাদের বিমোহিত করে, আর অপ্রাপ্তির কদর্যতা আমাদের কলিজাটা পুড়িয়ে করে দেয় ভষ্ম।
# হার
ভেতর থেকে হেরে গেলে বাইরে থেকে লড়াই করা যায় না।
# নামকরণের সার্থকতা
স্কুল-কলেজ জীবনে বাংলা পরীক্ষায় প্রায়শই বিভিন্ন গদ্যের নামকরণের সার্থকতা লিখতে হতো। সেসব অনেক সহজ ছিল। বাস্তব জীবনে এসে লোকাল বাসের নামকরণের সার্থকতা রক্ষা করতে সর্বসাধারণের জীবনের প্রয়োজন পড়ে। হায়রে নাম.......
# আত্মতুষ্টি
কিছু কিছু অধিকার শুধুমাত্র আত্মতুষ্টির জন্য ত্যাগ করতে হয়। নিজ আত্নাকে অশান্তি দিয়ে অন্যের ভালো বা মন্দের অংশীদার হওয়ার মত ভুল আর কিছু নেই। একজন মানুষের উপর আরেকজন মানুষের প্রভাব কমবেশী থাকে, সেই প্রভাব কাটিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টাকে কদর করাটাই প্রজ্ঞার পরিচয় বহণ করে।
# সাফল্য
পৃথিবীর প্রতিটি মানুষ সাফল্য অর্জন করুক সেই প্রত্যাশা। নিজে সফল হতে অন্যকে ব্যর্থ প্রমাণিত করার প্রবৃত্তি হতে বের হয়ে আসাটাই সবচেয়ে বড় সাফল্য।
# সীমিত সুযোগ
জীবন তোমাকে বেশ কয়েকটা সুযোগ দিবে এবং তুমি সেগুলো হেলায় নষ্ট করলে জীবন এরপর আর তোমাকে কোনো সুযোগ দিবে না!
# ভূমিকা-উপসংহারহীন শেষ মুহূর্ত
পরীক্ষার শেষ মুহূর্তে মানুষ চেষ্টা করে তার পরীক্ষার খাতায় অবশিষ্ট প্রশ্নের উত্তরগুলো সংক্ষিপ্ত করে হলেও সে যেন লিখে আসতে পারে। সেসব উত্তরগুলো হয় একদম ভূমিকা-উপসংহারহীন, যা কিছুটা অপরিপক্কতার পরিচয় বহন করে। তেমনি জীবনের শেষ মুহূর্তেও কিছু কিছু মানুষ অনেকটা অপরিপক্ব ভাবে তার মনের সত্যিকার ভাবগুলো ভূমিকা-উপসংহারহীনভাবে প্রকাশ করে বসে! তার এই অপরিপক্কতা তার মনের অপূর্ণতাকে পূর্ণতা দান করে, হয়তো!
# হারানো সময়
মাস চারেক পর, চায়ের কাপে ধোয়া হয়ে আমি উড়ে যাবো বহুদূর। হয়তো মেঘের দেশে মেঘের সাথে মিশে যাবো। তারও আগে আমি মিশে গেছি সময়ের অবহেলায়! সময় চলে যাওয়ার পর তুমি বুঝবে তুমি সময়কে হারিয়েছো, খুব বাজে ভাবে!
# বন্ধ চোখে খুঁজে পাওয়া
আকাশে গুচ্ছ গুচ্ছ মেঘেরা উড়ে যাচ্ছে। শত শত মেঘ গুচ্ছের মাঝে তোমায় খুঁজে পেতে আমার সমস্যা হয় না, চোখ বন্ধ করলেই আমি তোমাকে খুঁজে পাই!
# শুভ সকাল
আকাশের গুচ্ছ গুচ্ছ মেঘেরা এখন আর শুভ সকাল জানায় না। তবু সকালগুলো জীবনে আসে, বেলায়-অবেলায়।
# প্রস্থান
সময়ের সাথে বুড়িয়ে যাচ্ছি, একটা একটা করে বছর গুণছি, আর অপেক্ষা করে আছি আরও কিছু অর্জনের, যেটা আমি মনে মনে ভেবে রেখেছি আমার প্রাপ্য।
তবে একটা সময় তো অবশ্যই আসবে যখন একটা নতুন বছর আসলেই মনে হবে এটাই হয়তো ইহজীবনের শেষ বছর। আহা! কত প্রিয় প্রিয় মুখ! সব ছেড়ে যাওয়াটা কী যে কষ্টের! তবু যেতে হবে জানি।
এ ছুটে চলা থামাতে হবে, সঠিকভাবে বলতে গেলে নিজেই থেমে যাবে। সৃষ্টির পর থেকে মানুষ একটা কাজই করে যাচ্ছে, সেটা হলো গণনা। সবকিছুর, সব কাজের একটা সংখ্যাভিত্তিক তথ্য তার চাই ই চাই! সংখ্যা ই তো সব, এত এত উদযাপন সংখ্যা ছাড়া কিভাবে হবে! মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এ সংখ্যার খেলা চলবে, আর বিখ্যাতদের নিয়ে সংখ্যার এ খেলা চলবে হয়তো অন্তিম দিন পর্যন্ত!
# প্লাসিবো ইফেক্ট
মানুষের দেহের উপর তার মনের আছে মারাত্মক শক্তিশালী প্রভাব। মানুষ চাইলেই কি কোনো প্রকার ঔষধ ছাড়া কোনো রোগ থেকে মুক্তি পেতে পারে? হয়তো পারে! এ ধারণা থেকে আসলে উৎপত্তি হয়েছে এক চমৎকার থিওরি- 'প্লাসিবো ইফেক্ট'। প্লাসিবো হলো এমন নকল একটি বস্তু যা গ্রহণে প্লাসিবো ইফেক্টের প্রভাবে একজন অসুস্থ মানুষ সুস্থ হয়ে উঠে। অস্বাভাবিক মানসিক কষ্ট দূর করতে প্লাসিবো ইফেক্ট খুব ভালো কাজ করে থাকতে পারে, হয়তো! কিন্তু কিছু কিছু মানুষের জন্য সঠিক প্লাসিবো খুঁজে পাওয়া অনেকটা অসম্ভব হয়ে পড়ে। প্লাসিবো গ্রহণ করে বিরূপ প্রতিক্রিয়া শুরু হলে সেটা দূর করতে নতুন প্লাসিবো খুঁজে পাওয়া কি আসলেই সম্ভব!
# বাটারফ্লাই ইফেক্ট
বাটারফ্লাই ইফেক্ট নিয়ে পৃথিবীর খুব কম মানুষই ভাবে। এটা নিয়ে ভাবতে আমার সবসময়ই খারাপ লাগে। বাটারফ্লাই ইফেক্টের সমস্যা হলো এটা যে কোনো একটা ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরের কারণটাই বুঝতে সহায়তা করে, ঘটনা যা ঘটার তা তো ঘটেই যায়! অতীতে ফিরে যাওয়ার একটা উপায় হলো অতীতের স্মৃতিকে রিক্রিয়েট করা। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সমস্যা অতীতের স্মৃতিতে আমরা একা থাকি না, তাই এর রিক্রিয়েশন করা আমাদের পক্ষে সবসময় সম্ভব হয় না।
# হিমুর নীল পাঞ্জাবী
আজ অনেকদিন পর হিমু ঘর থেকে বের হলো। হুমায়ূন আহমেদ মারা যাওয়ার পর থেকে হলুদ পাঞ্জাবী পড়া ছেড়ে দিয়েছে সে, হুমায়ূন বিয়োগের শোকে এখন সে নীল পাঞ্জাবী পড়ে। মুখভর্তি কাঁচা-পাকা দাড়িতে এখন তাকে খুব একটা চেনা যায় না। মাথার চুলগুলোও অবাধ্য হয়েছে অনেক আগেই। ঘর থেকে বের হবার উদ্দেশ্য চুল দাড়ি কাটানো! কিন্তু সমস্যা হলো হাতে একটা টাকাও নেই!
হিমু ঠিক করলো সে খুব দামী কোনো সেলুনে গিয়ে শেভ করবে। শেভ করা শেষে টাকা চাইলে সোজা সাপ্টা বলে দিবে তার কাছে কোনো টাকা নেই! সেলুনের মালিক হয়তো তখন রাগের মাথায় তার মাথা ন্যাড়া করে দিবে! খুব ভালো না?
# হিমু ও বসন্তবৈরি
হাঁটতে হাঁটতে হিমু পথে একটা বসন্তবৈরি পাখি দেখলো। অদ্ভুত সুন্দর গোলাপী রঙের পাখিটা হয়তো তার নীড়ে ফিরছে। হিমু হাঁটা থামিয়ে অপলক তাকিয়ে থাকলো পাখিটার দিকে, যতক্ষণ পাখিটা তার দৃষ্টি সীমার মাঝে ছিলো। আচ্ছা বসন্তবৈরি কি গোলাপী হয়? হিমুর জানা নেই। কিন্তু এটা ঠিক ঠিক বসন্তবৈরি পাখিই ছিলো!
# ২৫ পয়সায় সুখ
খুব ছোটবেলায় মাত্র ২৫ পয়সায় আমি আমার সুখ কিনতে পারতাম। ১ টাকায় তো বিশাল সুখ! চার চারটা ২৫ পয়সার লজেন্স!!! এখন আমার সুখগুলো আরো সস্তায় পাই আমি! কোনো পয়সা খরচের প্রয়োজন পড়ে না, স্মৃতিগুলো রোমন্থনে কোনো পয়সা লাগে না, স্রষ্টা ফ্রিতেই মহামূল্যবান স্মৃতিগুলো মনের ক্যানভাসে ফুটিয়ে তোলার ক্ষমতা অন্যদের মত আমাকেও দিয়েছেন!
# তৃষ্ণার্ত পাখি
আজকের সকালটা চমৎকার ছিলো। তৃষ্ণার্ত পাখির পেটে বাদাম খেতে যাওয়া মানুষটা ভালো থাকুক তার ক্ষুধা নিয়ে!
# পড়া বইগুলো
কিছু কিছু বই আমরা সংগ্রহে রাখি, একবারের বেশী পড়ি। পৃথিবীতে যে পরিমাণ বই লিখা হয়েছে আমাদের সারাজীবনেও তার ০.০১ শতাংশ পড়ে শেষ করা যাবে না। তারপরও আমরা কিছু কিছু বই দ্বিতীয়বার পড়ি, বার বার পড়ি! যে লেখাগুলো আমাদের ধারণ করে তাদেরকেই বার বার পড়া হয়!
আচ্ছা, এমনকি হতে পারে না যে আমাদের না পড়া এমন কোনো বই আছে যা আমাদের আরো দারুণভাবে ধারণ করে! অবশ্যই হতে পারে।
# একাকীত্বতা
মাঝে মাঝে মানুষ একা থাকতে পছন্দ করে। একটা সময় একাকীত্বতা উপভোগ করতেও শিখে যায়! একাকীত্বতা তখন আর পছন্দের পর্যায়ে থাকে না, সেটা হয়ে যায় এক ধরণের মাদক, যা ছাড়া বেঁচে থাকাটাই কঠিন হয়ে পড়ে!
# ফ্যালফ্যাল চাহনি
মানুষ তার দূরের ভবিষ্যত বা নিকট ভবিষ্যতে কি ঘটতে যাচ্ছে জানে না বলেই অহংকারের বশবর্তী হয়ে অনেক কিছু করে ফেলে। সময় যখন বাস্তবতা উন্মোচিত করে তখন ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে থাকা ছাড়া কিছুই করার থাকে না। ভবিষ্যত সময়ের অনিশ্চয়তাকে মাথায় রেখে একটু দৌড় ঝাঁপ কম করার অভ্যাস আপনার ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকার সম্ভাবনা অনেকটাই কমিয়ে আনবে।
# ভবিষ্যত বাণী
কিছু মানুষ খুব নিখুঁত ভবিষ্যত বাণী করতে পারলেও সেটা কাকতালীয় ঘটনা ছাড়া কিছু নয়। কারণ তার ভবিষ্যত বাণীর সাফল্য যে অসংখ্য নিয়ামকের উপর নির্ভর করে তার কোনোটাই তার নিয়ন্ত্রণাধীন নয়। অসংখ্য নিয়ামক কাকতালীয়ভাবে একসাথে ঠিকঠাক থেকে তার একটি ভবিষ্যত বাণীর সফল মঞ্চায়ন করে মাঝে মাঝে সবাইকে চমকে দেয়!
# মনের বাক্স
পরকালে নিজের সাথে নিয়ে যাওয়ার জন্য অনেকগুলো স্মৃতি গুছিয়ে নিচ্ছি! স্মৃতিগুলো একান্তই আমার নয়, স্মৃতি কখনোই একার হতে পারে না! স্বার্থপরের মত কারো অনুমতি না নিয়েই তার কিছু স্মৃতি পরপারে নিয়ে যাওয়ার মাঝে এক ধরণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা হয়ে যায়, যে অধিকার এই নশ্বর পৃথিবীর জ্ঞান দিয়ে ব্যাখ্যা সম্ভব না!
# তোমার সবটা বুঝতে হবে না!
আমরা যতগুলো ডাইমেনশন সম্পর্কে জানি তার বাইরে যেমন অন্য কোনো ডাইমেনশন নিয়ে ভাবতে পারি না তেমনি এসব ডাইমেনশনের কোনো একটা না থাকলে কেমন লাগবে সেটাও বুঝতে পারি না! মানুষের চিন্তাশক্তির মাঝে স্রষ্টা প্রদত্ত যে সীমাবদ্ধতা আছে তা আসলে আমাদের কি বলতে চায়? "তোমার সবটা বুঝতে হবে না!" 'সময়' ডাইমেনশনটা না থাকলে কেমন হতো তা আমার খুব জানতে ইচ্ছে করে। জানার কি কোনো উপায় আছে?
# অস্তিত্বহীন সত্ত্বা আমার
চোখ বন্ধ করে কোনোকিছু নিয়ে যখন গভীর চিন্তায় মত্ত থাকি তখন নিজের অস্তিত্ব অনুভব করতে পারি না! শুধুমাত্র যে চিন্তা করছি সে চিন্তাটাই যেন আমি, সে অনুভূতি প্রবল হয়। নিজের এই অস্তিত্বহীন অবস্থায় মারা গেলে কি চিন্তার মাঝে আমার সত্ত্বা আটকে পড়বে অসীম সময়ের জন্য? এমন হলে মন্দ হতো কি?
# ভাবনার ক্যানভাস
সকাল সকাল ভাবি স্নিগ্ধ ভোর নিয়ে কয়টা লাইন লিখি! সকাল গড়িয়ে দুপুর হলে ক্লান্ত মনে ভাবি রৌদ্রোজ্জ্বল সকাল নিয়ে কিছু একটা লিখি! বিকেলে শত ব্যস্ততায় ক্লান্ত দুপুর নিয়ে একটু ভাবে আমার অলস মন, ভাবতে ভাবতে সন্ধ্যে ঘনিয়ে আসে, বিকেল নিয়ে কিছু করা হয় না তেমনভাবে! ঝুপ করে নেমে আসা রাতটাও সন্ধ্যে বেলার জ্যামে রিকশায় বসে থাকা আমার কথা কিছু লিখে উঠতে পারে না। ভাবনার ক্যানভাসের অনেক কিছুই না লিখে হয়তো ঘুমিয়ে পড়ি অনেকদিনের মত!
# অচেনা সময়
মাঝে মাঝে আমাদের হারিয়ে যেতে হয়, এমনভাবে যেন আমরা কখনো ছিলামই না। একদিন দু'দিন করে একটা সময় পর আমরা যখন আবার ফিরে আসি তখন চারপাশটা অনেক অচেনা মনে হয়। পৃথিবীতে জন্মের পর চারপাশটা যেমন অচেনা মনে হয়, তার চেয়ে বেশী অচেনা মনে হয় এ সময়টায়!
# স্রষ্টা-জীবন-আমরা
স্রষ্টার কাছ থেকে আমাদের বা আমাদের কাছ থেকে স্রষ্টাকে সবচেয়ে দূরে রাখে কোন জিনিসটা বলতে পারেন? প্রশ্নটা করলে অনেকে অনেকভাবে ভাবতে শুরু করে। আমার মতে স্রষ্টাকে আমাদের কাছ থেকে দূরে রাখে শুধুমাত্র একটা জিনিস, সেটা হলো আমাদের জীবন! তাই বলে স্রষ্টাকে পাওয়ার জন্য জীবন ত্যাগ, বা জীবনকে পাওয়ার জন্য স্রষ্টাকে ত্যাগ করাও সমীচীন নয়। আমরা যেন এই দুইয়ের মাঝে একটা অত্যানুকুল অবস্থা তৈরি করে চলতে পারি তার জন্যই আমাদের দেয়া হয়েছে আমাদের মস্তিষ্ক।
# বিশ্বাস আর প্রার্থনা
স্রষ্টাকে বিশ্বাস করা আর স্রষ্টার প্রার্থনা করা দুটোই গুরুত্বপূর্ণ। কেউ স্রষ্টার প্রার্থনা না করলেও যদি স্রষ্টায় বিশ্বাস রাখে তবে তার একটা আশা থাকলেও বিশ্বাসবিহীন প্রার্থনাকারীর কোনো আশা নেই।
# অশ্রুসিক্ত
জন্মের পরপরই আমরা কাঁদতে শিখি। আমাদের অশ্রুবিহীন সে কান্না অনেককে অশ্রুসিক্ত করে। জীবনে আমরা আরো অনেকবার কান্না করি, সে কান্নায় নিজেরা অশ্রুসিক্ত হলেও আমাদের সে অশ্রু অন্য কাউকে অশ্রুসিক্ত করতেও পারে আবার আনন্দও দিতে পারে। নিজে অশ্রুসিক্ত হয়ে অন্যকে আনন্দিত হতে দেখা এক মারাত্মক অভিজ্ঞতা!
# বাতাসে গা ভাসাবে কি?
একটা জিনিস একটু আগে হঠাৎ করেই মাথায় আসলো। যে কোনো বস্তু ঘেঁষে দিনের পর দিন বায়ু প্রবাহিত হলে সেটা বাতাসের ঘর্ষণের কারণে আস্তে আস্তে ক্ষয়ে যায়। আমাদের গ্রহগুলোর বাইরে মহাশূন্য। কোনো বাতাস নেই। থাকলে কি হতো সেটা ভাবতেই অবাক হচ্ছি।
(তাই সবসময় বাতাসে গা ভাসিয়ে দেয়া ঠিক না!)
# বয়স বাড়ার ভালো দিক
বয়স বাড়ার একটা ভালো দিক আছে। একজন মানুষের জীবনে সবকিছু নেগেটিভ হলেও প্রতিদিন বয়স আরো পজিটিভ হয়, পজিটিভ হতে হতে একদিন হুট করে ইনফিনিটিতে প্রবেশ করে! বয়সের ক্ষেত্রে ঋণাত্মক সংখ্যারেখা কোনোদিন ব্যবহৃত হয় না, এ এক প্রহসন। তবে মায়ের গর্ভে থাকা সময়টাকে সংখ্যারেখার বামে স্থান দেয়া যেতেই পারে!
# না সত্য না মিথ্যা
মিথ্যা বলার চেয়ে সত্য না বলা অনেক ভালো!
# ১০০% সত্য
১০০% সত্য কথা বলতে কিছু নাই। ১০০% সত্য ঘটনা থাকতে পারে, অর্থাৎ যা ঘটে তা ১০০% সত্য। কিন্তু যখনই ঘটনার বর্ণনা দেয়া হয় তা আর ১০০% সত্য থাকে না, কিছুটা হলেও সত্যের বিচ্যুতি ঘটেই। সাধারণত বক্তা তার দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই ঘটনার বর্ণনা নিয়ে থাকে।
# রোদ আর বৃষ্টি
মাঝে মাঝে আকাশে রোদ বৃষ্টি একসাথে খেলা করে। খেলা করে মেঘের সাথে সূর্যের আলো! মেঘের কাছে সূর্য অনেক ঋণী, তাই সে তার তাপে মেঘকে গলায় না। পরম মমতায় আকাশে ভাসতে দেয়, তার যতক্ষণ খুশি! আচ্ছা সূর্য একদিন তার সব তাপ, সব আলো হারাবে, সেদিন কি মেঘ মনে রাখবে সূর্যের দেয়া আলোদের, ভালোবাসার উষ্ণতাদের?
# তিনটি লাইন!
মন ভাঙার কোনো শব্দ থাকে না,
শব্দ থাকলে তুমি হয়তো শুনতে পেতে,
আমার মন ভাঙার ভীষণ সে শব্দ!
সূর্যের যেদিন আলো ফুরাবে, সেদিন এই লাইন তিনটি মেঘের জন্য সে পাঠাবে তার আলোর শেষ ছটায়!
# ভয়কে জয়
সেপ্টেম্বর একটা ভয়ংকর মাস। আরো ৯ দিন বাকি মাসটা শেষ হতে। মজার ব্যাপার হলো ভয়ের শুরু যেমন আছে, শেষও তেমন আছে। শেষটা দু'ভাবে হয়, ভয়কে জয় করে আর ভয়ের কাছে পরাজিত হয়ে!
# হাসিমুখ
মাঝে মাঝে মন খারাপের রাজ্যের কাছে মহাবিশ্বকে অত্যন্ত ক্ষুদ্র মনে হয়, অনেকটা বিগ ব্যাঙ এর পূর্বের অবস্থার মত! তবে মন ভালো করার জন্য অনেক সময় একটা হাসিমুখই যথেষ্ট।
# হেসে হেসে কুটকুট!
হাসিমুখ, হাসিমুখ, হেসে হেসে কুটকুট!
# ঠিক ঠিক
'ঠিক' আর 'সঠিক' এর মাঝে অনেক অনেক পার্থক্য। পার্থক্যটা 'ঠিক' আর 'বেঠিক' এর চেয়েও বিস্তর বেশী!
# মেঘ হয়ে ঝরবো কবে!
আকাশে শত শত মেঘের আনাগোনায় একটা মেঘ ঠিকই থেমে থাকে একটি জায়গায়। মেঘটা দুঃখ ভারাক্রান্ত মনে একটা সময় ঝরে পড়ে বৃষ্টি হয়ে। তার খুব ইচ্ছে হয় মেঘ হয়ে ঝরে পড়তে, বৃষ্টি হয়ে নয়!
# আশিতে আর আসি নাই!
রবি ঠাকুর বেঁচে থাকলে বয়স হতো ১৬০ বছর। উনি মারা গিয়েছে ৮০ বছর হলো। আশিতে বাঁচি, আশিতে মরি, আশিতে আর আসি নাই।
# স্বপ্নের চেয়ে কয়েক মুহূর্ত বেশী!
আমার স্বপ্নগুলো বা বলতে গেলে আমার স্বপ্নটা আমার সবচেয়ে বড় সম্পদ। আমার স্বপ্ন আমাকে বাঁচিয়ে রাখে, আমার স্বপ্ন আমার অক্সিজেন, আমার স্বপ্ন আমার সবক'টি কবিতার প্রাণ। মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়, কথাটি কে বলেছে মনে পড়ছে না। তবে আমি আমার স্বপ্নের সমান বাঁচতে চাই, বা স্বপ্নের চেয়ে কয়েক মুহূর্ত বেশী!
# আমি
মাঝে মাঝে পিন পতন নীরবতায় আমরা ভাবতে চাই আমাদের নিজেদের নিয়ে। ভেবে ভেবে একটা সময় আমরা ক্লান্ত হয়ে আবার কোলাহল খুঁজতে থাকি। কোলাহল খুঁজে পাওয়া হয়, খুঁজে পাওয়া হয় একদল বন্ধু বা একদল মানুষ যাদের আমরা বন্ধু ভাবি (!), খুঁজে পাওয়া হয় অনেক কিছু, কিন্তু আমাদের আর খুঁজে পাওয়া হয় না 'আমি' -কে।
# অদ্ভুত উদাস দৃষ্টি!
জীবনের কোনো পর্যায়ে তোমার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মানুষের কাছে তোমার গুরুত্বহীনতা তোমাকে একদম শেষ করে দিবে, একদম ধূলিস্যাৎ করে দিবে। তুমি তারপরও বেঁচে থাকতে চাইবে, গুরুত্বপূর্ণ মানুষটাকে জীবনের বাকিটা সময়ও গুরুত্ব দেওয়ার জন্য! এ বেঁচে থাকায় প্রাণ থাকে না, থাকে শুধু অদ্ভুত উদাস দৃষ্টি!
# জীবনের মূল্য আসলে কত?
একজন মানুষের জীবনের মূল্য আসলে কত? এটা নির্ধারণ করা আসলেই কি সম্ভব? মানুষের জীবনের মূল্য আসলে কত হতে পারে?
তাকে বাঁচিয়ে রাখতে যে পরিমাণ অর্থ প্রয়োজন সেটাই আসলে তার মূল্য। এর চেয়ে কম হলে মানুষটা বাঁচবে না! বেশী হলে সমস্যা নেই, অতিমূল্যায়ন হওয়া ছাড়া!
# জীবনের সমীকরণ
জীবনের অনেকগুলো সমীকরণ থাকে। এক একজন মানুষ ভিন্ন ভিন্ন ভাবে সমীকরণের সমাধান করে, সমাধানে তাদের সময়ও লাগে ভিন্ন ভিন্ন। যে কারণে কোনো একটা সমীকরণের সমাধান আগেই করে ফেলা মানুষটার কথা যারা সমীকরণটা সমাধান করে নি তারা বুঝতে পারে না। যতদিনে সমাধান করে সেটা বুঝতে পারবে ততদিনে হয়তো ওপর মানুষটা অন্য কোনো সমীকরণ সমাধানে ব্যস্ত! তাই মাঝে মাঝে সমীকরণের উত্তর কেউ বলে দিলে সেটা নিয়ে ভাবা উচিত, সেটা গ্রহণ করা উচিত, সমাধান করে তো সেই উত্তরটাই পাওয়া যাবে! সবকিছু নিজেকেই করতে হলে স্রষ্টা আমাদের জাতিগতভাবে সৃষ্টিই করতেন না হয়তো!
# মেঘ বৃষ্টি
প্রচন্ড বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টি হলে অনেকগুলো মেঘ আকাশ থেকে ঝরে পড়ে জমিনে। মেঘের এই ঝরে পড়া আমার পছন্দ না, মেঘ আকাশেই ভালো। মেঘহীন বৃষ্টি সম্ভব না, কিন্তু বৃষ্টি সেটা বুঝেই না! মেঘ ছাড়া বৃষ্টির কোনো মূল্য নেই, একদম না।
# I Quit!
I Quit! কত ছোট একটা কথা! কিন্তু এর অর্থের গভীরতা কি পরিমাপ করা যায়?
স্রষ্টার যতো সৃষ্টি আছে তার মধ্যে মানুষ অন্যতম হলেও মানুষ অনেক বিচিত্র প্রাণী। মানুষের মাঝে একদল খুব হিসেবী, একদল বড্ড বেহিসেবী, একদল খামখেয়ালী, একদল খুব খেয়ালী! একদল বয়সে বাড়লেও মন থেকে সেই ছোট্টটি রয়ে যায়, একদল ছোট্ট বয়সেই অনেকটা বেশী বুঝে যায়, একদল কোনো কালেই কিছুই বুঝতে চায় না, একদল সবটা বুঝেও করে কিছু না বোঝার মিছে অভিনয়!
মানুষ মাঝে মাঝে প্রচন্ড আকুতি নিয়ে কিছু একটা চায়, মন থেকেই চায়, কিন্তু তার আকুতি অন্য মানুষের মনের দেয়াল ভেদ করতে পারে না, পারে না বোঝাতে যে এই আকুতি অনেকটা মরতে না চাওয়ার আকুতি! মানুষের দৈহিক মৃত্যুর দায়ে ফাঁসির বিধান থাকলেও আত্মিক মৃত্যুর জন্য কোনো কিছুর বিধান নেই, তাই কেউ কেউ ছোট্ট করে বলে, I Quit!
# সময়ের কাঙ্গাল
মাটি ফুঁড়ে হঠাৎ এক ধরণের আশ্চর্য প্রাণী বের হলো! প্রতিদিন তারা মানুষের সময়গুলো শুষে নেয়, যেমনটা মশা শুষে নেয় রক্ত! দিন দিন মানুষগুলো এক একটা রক্তশূন্য সময়ের কাঙ্গাল হয়ে যাচ্ছে। তাদের হাতে মশারি থাকলেও মশারি টানানোর সময়টা যে সে অদ্ভুত প্রাণীটা শুষে নিয়েছে অনেক আগেই!
# কাজের সন্ধান
অনেকটা দিন, অনেকটা কাল . . . ভালো লাগা কাজের সন্ধান না পাওয়া মানুষটা ভালো না লাগা কাজের সন্ধান করতে গিয়ে অবাক হয়ে লক্ষ্য করলো- সে ভালো না লাগা কোনো কাজের সন্ধানও পাচ্ছে না! তার করা প্রতিটা কাজ ভালো বা মন্দ লাগার অনেক উর্ধ্বে, শুধু করার জন্যই করা! মানুষটা এখন আইনস্টাইন এর মতো উদাস মনে ভাবছে, আপেক্ষিকতা ঠিক কতটা আপেক্ষিক?
# গল্পের জীবন
গল্প লিখতে হয় বানিয়ে বানিয়ে, সত্য-মিথ্যা মিশিয়ে, সাদাসিধা কথার ফাঁকে হ-য-ব-র-ল কল্পনার মিশ্রণে। গল্প লিখতে হয় মনের তাগিদে! গল্প লিখতে হয় এমনভাবে যেনো মনে হয় গল্পেরও একটা জীবন আছে, যে জীবন শুরু হয় পাঠক গল্পটা পড়ে শেষ করার ঠিক পর পর!
কারো জীবনের সাথে কোনো গল্প যদি মিলে যায় তাহলে সেটা গল্পের দোষ, লেখকের নয়! গল্পটা লেখকের সৃষ্টি হলেও তাতে প্রাণের সঞ্চার যে পাঠকই ঘটায়!
# কবর
মানুষ তার ক্রয়কৃত জায়গা-সম্পত্তি খুব দ্রুতই নিজের দখলে নিতে চায়, অন্য কেউ দখল করে নিবে এ ভয়ে হয়তো! কিন্তু নিজের জন্য কেনা কবরের জায়গাটা দখলে তার কোনো তাড়া লক্ষ্য করা যায় না, যতো দেরিতে সে জায়গার প্রকৃত দখল নেয়া যায় ততোই ভালো! মানুষ ঘাসের উপর শুয়ে আকাশটা দেখতে চাইলেও ঘাসের নিচে মাটির ভিতর নিজেকে ভাবতে চায় কী?
কবরস্থান সাধারণত গাছ-গাছালিতে পরিপূর্ণ থাকে। হয়তো এই আশায় গাছ লাগানো হয় যে গাছের ছায়ায় নিজের কবরটা শীতল থাকবে! না কি গাছ লাগানো হয় বংশধরদের জন্য, যেনো তারা গাছের ছায়ায় একটু শান্তিতে কবর জেয়ারত করতে পারে! আমার সঠিক জানা নেই।
# পশুত্বের বিসর্জন
আমার কাছে মনে হয় প্রতি বছরের কোরবানির ঈদ এর আগের বছরের চেয়ে আরও বেশি মহিমান্বিত। দিন দিন পৃথিবীর মানুষের পশুত্ব যেনো বেড়েই চলেছে! আগের বছরের চেয়ে এ বছর একটু বেশি, পরের বছর হয়তো আরেকটু বেশি! তাই কোরবানির ঈদে বিসর্জন দেয়ার মতো পশুত্বের পরিমাণও বৃদ্ধি পাবে নিঃসন্দেহে। তবে পশুত্ব বিসর্জন দিলেও অধিকাংশেরই হয়তো আর মনুষ্যত্ব অর্জন করা হয়ে উঠে না!
# দূরত্ব
একটা শিশু যখন হাসতে হাসতে খেলাচ্ছলে একটা ঘাসফড়িং এর ডানা ছিঁড়ে ফেলে, তখন স্রষ্টা তা দেখেন এবং এর জন্য হয়তো তাকে ক্ষমাও করে দেন।
অনেক সময় কিছু কিছু মানুষের বিবেক-বুদ্ধি বিবর্জিত খামখেয়ালী সিদ্ধান্ত কোটি কোটি মানুষকে জীবন্মৃত অবস্থায় ফেলে দেয়। স্রষ্টা সেটাও দেখেন, কিন্তু তাদের ক্ষমা হয়তো করেন না!
নিষ্পাপ আর পাপীর মাঝে দূরত্বটা কখনো কখনো একটা ঘাসফড়িং এর সমান বা এর চেয়ে কম। তবে দূরত্বটা কখনোই খুব একটা বেশি না।
# ব্যতিক্রম
পৃথিবীর প্রায় সকল প্রক্রিয়ার কিছু ব্যতিক্রম থাকে। সূক্ষ্মভাবে লক্ষ্য করলে দেখা যাবে এসব ব্যতিক্রমও একটা নিয়ম মেনেই ব্যতিক্রম!
স্রষ্টা চাইলেই যা খুশি তাই করতে পারতেন, কিন্তু তিনি তা করেননি বা, করেনও না। স্রষ্টার প্রত্যেকটা কাজ অত্যন্ত সূক্ষ্ম বৈজ্ঞানিক ভিত্তিতে করা। অথবা বলা যায় স্রষ্টার কাজের ধরণকে অনুধাবন করে আমরা তার নাম দিয়েছি বিজ্ঞান।
কিছু কিছু মৃত্যু আমাদের মাঝে শূন্যতা বা হতাশা তৈরির পরিবর্তে আমাদের পূর্ণ করে। আমাদের মনে হয় আমাদের খুব কাছের কারো মৃত্যু হয়তো আমাদের মাঝে চরম শূন্যতা বা হতাশার সৃষ্টি করবে। কিন্তু অনেক সময় মৃত ব্যক্তি তার সমগ্র সত্ত্বা নিয়ে কোনো এক অজানা উপায়ে আমাদের মাঝে ভর করে, তার সব বৈশিষ্ট্য কোনো এক অদ্ভুত কারণে আমাদের মাঝে ফুটে উঠে। এটা একটা ব্যতিক্রম, কিন্তু এ ব্যতিক্রম ঠিক কোন নিয়ম মেনে ব্যতিক্রম?
# দারুচিনি জীবন
মাঝে মাঝে জীবনকে দারুচিনির মতো মিষ্টি মনে হবে, আবার মাঝে মাঝে মনে হবে একদম এলাচের মতো! তবে যেমনই হোক না কেনো, জীবনে প্রাণ থাকা চাই! বেঁচে থাকা মানেই জীবনে প্রাণের সঞ্চারন নয়। কেউ কেউ আবার এলাচের মাঝে দারুচিনির মিষ্টতা খুঁজে পায়, তারা জীবনে প্রাণের পাশাপাশি স্বর্গীয় সুখের সন্ধান পেয়েছে সেটা নির্দ্বিধায় বলতে পারি।